আশুলিয়ায় ছাত্রীর সাথে প্রেমের অপবাদে এক শিক্ষকের লাখ টাকা জরিমানার অভিযোগ!


admin প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ২১, ২০২৪, ১০:২১ পূর্বাহ্ন /
আশুলিয়ায় ছাত্রীর সাথে প্রেমের অপবাদে এক শিক্ষকের লাখ টাকা জরিমানার অভিযোগ!

হেলাল শেখ, বিশেষ প্রতিনিধিঃ ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন ভাদাইল দক্ষিণ পাড়া শাজাহান মার্কেট সংলগ্ন এম এম স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালক সিরাজুল ইসলাম সিরাজের বিরুদ্ধে নিজ প্রতিষ্ঠানের এক সিনিয়র -সহকারী শিক্ষককে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানার পর চাকুরীচ্যুত করে এলাকা থেকে তাঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গত ১১ ই ফেব্রুয়ারী রবিবার দিন ভাদাইল দক্ষিন পাড়া এম এম স্কুল এন্ড কলেজে ঘটনাটি ঘটে, জানা যায় এম এম স্কুল এন্ড কলেজে রাদিয়া নামের এক চলমান এস এস সি পরীক্ষার্থীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক এবং কৌশলে ২টি স্বর্ণের চেইন ও ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এনে সহকারী শিক্ষক সাজেদুর রহমান সাজিদ কে মারধর করে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। নগদে জরিমানার টাকা দিতে না পারায় কয়েকিন পরে টাকা দেওয়ার শর্তে দুটি ফাঁকা স্টাম্পে সাক্ষর ও টিপসই নিয়ে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেন উক্ত প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ।

ঘটনার পর থেকে স্কুল শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মধ্যে বেশ আলোচনা সমালোচনা ও গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে তার-ই পরিপেক্ষিতে সংবাদকর্মীরা তথ্য সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থলে গেলে এম এম স্কুলের পরিচালক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ প্রথমে ঘটনাটি অস্বীকার করে বলেন সহকারী শিক্ষক সাজিদের যক্ষা রোগ হওয়ায় তাকে তিন মাসের ছুটি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সংবাদকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের তোপের মুখে পরে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।তবে আশেপাশের লোকজনের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে অনেকেই পরিচালক সিরাজুলের ভয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।

অন্যদিকে ঘটনার ভুক্তভোগী সহকারী শিক্ষক সাজেদুর রহমান সাজিদ সংবাদকর্মীদের কাছে মুঠোফোনের মাধ্যমে অভিযোগ করে বলেন, গত রবিবার ১১ ফেব্রুয়ারি আমি বাচ্চাদের টিউশনি করাচ্ছিলাম এসময় পরিচালক সিরাজুল স্যারের ভাইস্তা সজিব আমাকে ডেকে নিয়ে যায় এম এম স্কুলের গেইটে যেয়ে দেখি সিরাজ স্যার সহ এলাকার ১০-১২ জন অল্প বয়সী ছেলে দাঁড়িয়ে আছে আমি পৌঁছা মাত্র কোন কিছু না বলে আমাকে বেধড়ক মারপিট শুরু করে আমি কারণ জানতে চাইলে তাঁরা আমাকে আরও বেশি মারপিট করেন এরপর আমাকে একটি কক্ষে বসিয়ে ব্যাথার ঔষধ খাওয়ান পরিচালক স্যার।

কিছুক্ষণ পরে আমাকে বলেন আমি নাকি রাদিয়া নামের এক ছাত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক করে দুটি স্বর্ণের চেন এবং ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছি, টাকা এবং স্বর্ণের চেন ফেরত না দিলে আমাকে নাকি পুলিশে দিবে অথচ এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা রাদিয়া নামের ওই ছাত্রীকে অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে আমি বিনা টাকায় প্রাইভেট পড়ায় কারণ তার বাবা নেই। সেসময় সেখানে রাদিয়ার ভাই রায়হানও ছিল আমি একাধিকবার রাদিয়াকে আমার সামনে আনার জন্য অনুরোধ করি কিন্তু তারা কোনভাবেই রাদিয়াকে আমার সামনে আনতে রাজি হননি।

একপর্যায়ে আমার বাবা-মা এবং শশুর শাশুড়িকে ফোন করে নিয়ে আসে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে বলেন , তাৎক্ষণিক নগদ টাকা দিতে না পারায় ব্ল্যাংক স্টাম্পে আমার সাক্ষর ও টিপসই নিয়ে আমার বাবা মা শশুর শাশুড়িকে জামিনদার বানিয়ে তাদের কাছেও সাক্ষর রেখে আমাকে ছেড়েদেন এবং দুইদিনের মধ্যে টাকা না দিলে মামলা করবেন বলে হুমকি দিয়ে এলাকা ছাড়তে বলেন।

ভুক্তভোগী সহকারী শিক্ষক সাজেদুর রহমান সাজিদ আইনগত কোন ব্যাবস্থা নিয়েছেন কি জানতে চাইলে তিনি বলেন ঘটনার পরে আমি সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছি খুব দ্রুত থানায় অভিযোগ দায়ের করবো।

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় এম এম স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ সহ প্রতিষ্ঠানটির নামে আরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে , তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন। এম এম স্কুল এন্ড কলেজ নামকরণের পূর্বে প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিলো মাদারী মাদবর স্কুল এন্ড কলেজ কিন্তু ২০১৬ সালে গুলিস্তানে হলি আর্টিজেন জঙ্গি হামলার পর প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় এম এম স্কুল এন্ড কলেজ, কারণ হলি আর্টিজান জঙ্গি হামলার সাথে উক্ত স্কুলের এক শিক্ষক জরিত থাকার গুঞ্জন উঠায় গা ঢাকা দিতে মাদারী মাদবর থেকে পরিবর্তন করে এম এম স্কুল এন্ড কলেজ নামে নামকরণ করে ফেলেন পরিচালক সিরাজুল ইসলাম।